ক্রাইম রিপোর্ট::
কক্সবাজার শহর থেকে উখিয়া পালংখালীর একটি বিশাল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা পাচার করে আসছে একাধিক ইয়াবা চক্র। নিয়মিত অভিযানে সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হওয়া বেশ কয়েকজন দৃস্কৃতিকারীর মাদক সংশ্লিষ্টতা যাচাই করে জানা গেছে- ব্যাক্তি বিশেষে এযাবৎকালের সর্বাধিক ইয়াবা পাচার করেছে কক্সবাজার শহরের রুমালিয়ার ছড়া এলাকার তানভীর। সে গত ১২ আগস্ট র্যাব-৭ এর হাতে চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ৩০ হাজার সংখ্যক ইয়াবা নিয়ে আটক হন।
এর আগেও তানভীর একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ইয়াবাসহ আটক হয়েছেলো। তানভীরের ইয়াবার যোগানদাতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সিরাজুল ইসলাম প্রকাশ চিক্কুইন্যা। সিরাজুল ইসলামের ব্যাপারে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে জনশ্রুতি রয়েছে- সিরাজুল ইসলাম চিক্ক্যুইন্যা সবচেয়ে ধ্যুর্ত প্রকৃতির একজন ইয়াবার যোগানদাতা। সেও এখনও পর্যন্ত ধরাছোয়ার বাহিরে রয়ে গেছে। অন্যদিকে তানভীর বারবার আটক হয়ে আসছে। এভাবে একাধিকবার আটক হলেও সিন্ডিকেটের গ্রিণ সিগনেলের জামিনে মুক্ত হয়েও ফের ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িয়ে যাচেছ তানভীর। আর তানভীরের এতোটা বেপরোয়া হয়ে উঠার পেছনে তার ভগ্নিপতি আনোয়ারুল ইসলাম জাবুর প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়- তানভীর তার আপন ভগ্নীপতি আনোয়ারোল ইসলাম জাবুর আশ্রয়ে থাকেন। এই বিশাল অংকের ইয়াবা পাচারে অর্থের যোগানদাতা হিসেবে মূল কলকাটি সেই নাড়ছে বলে তথ্য মিলেছে। উখিয়া পালংখালীর মৃত আবুল হোসেন মেম্বারের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম প্রকাশ জাবু। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে- তানভীর সিন্ডিকেটটির অন্যতম মূলহোতা সিরাজুল ইসলাম প্রকাশ চিক্কুইন্যা একজন রোহিঙ্গা শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। আর এই চিক্কুইন্যা জাবুর ভাগিনা পরিচয়েই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জাবু শুধুমাত্র চিক্কুইন্যা নয়; চিক্কুইন্যার মতো ৮/১০ জন রোহিঙ্গা মাদক ব্যবসায়ীকে সে প্রতিষ্ঠিত করেছে। জানা গেছে- গত ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা গণহত্যা চলাকালীন সময়ে রাখাইনের শীর্ষ ও মধ্যম সারির সকল ইয়াবা কারবারি এদেশে পালিয়ে আসে। সে সময় জাবু তার নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় বেশ কিছু চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আশ্রয় দেয় এবং প্রতিষ্ঠিত করে তোলে। তারাই এখন জাবুর ইয়াবা পাচার করে থাকে। আশ্চর্যজনকভাবে লক্ষ্য করা গেছে- জাবুর আশ্রয় দেওয়া অন্যান্য সব রোহিঙ্গা ইয়াবা পাচারকারীর নাম জন সম্মুখে উঠে আসলেও আনোয়ারুল ইসলাম জাবুর সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি কখনওই উঠে আসেনি। কিন্তু সম্প্রতি তার শালা তানভীর আটক হওয়ার পর জাবুর নামটি জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে জাবু কয়েক লাখ টাকার মিশন নিয়েও নেমেছে বলে জানা গেছে। এবিষয়ে বক্তব্য জানতে আনোয়ার ইসলাম জাবুর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগযোগ করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
এর আগে তানভীরের ইয়াবা পাচারের সাথে তার ভগ্নিপতি জাবুর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে র্যাব-৭ কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন- এধরণের ব্যবসায় আটকদের নিকটাত্মীয় বন্ধু বান্ধব অনেকেই জড়িত থাকেন। তবে জাবুর বিষয়ে এখনও স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আমরা খোঁজ নিচ্ছি। জড়িত থাকলে অবশ্যই আইনের আওতায় চলে আসবে।