মাওঃ হাফেজ শরীফুল ইসলাম
মুহাররমের ১০ তারিখ তথা আশুরার দিন একটি গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ দিন। ফজিলতপূর্ণ দিন তো বটেই। একথা আমরা সকলেই জানি।
কিন্তু এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য আমাদের কতটা অনুভূত হচ্ছে সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কেননা, একটা গোষ্ঠী তাজিয়া মিছিল ও নানা কুসংস্কার পালনের মাধ্যমে দিনটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য ভিন্নখাতে বা উল্টা দিকে নিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে আমাদের কোন মাথাব্যাথাই নেই। হযরত হোসাইন রা. রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোরআন সুন্নাহ এর বিধি-বিধান সঠিক পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের জন্য কারবালার প্রান্তরে রক্ত দিয়েছিলেন, সে লক্ষেও আমাদের নেই কোনো পরিকল্পনা।
মূলত এ দিনটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় সত্যের বিজয় ও মিথ্যার পরাজয়ের কথা। হকের ঝান্ডাবাহী কাফেলার উপর আল্লাহর অনুগ্রহের কথা। কেননা, পৃথিবীর শুরু থেকে হযরত মুসা আলাইহিস সালাম-এর ফেরাউনের জুলুম থেকে মুক্তি পর্যন্ত সত্যের পতাকাধারী অসংখ্য দল-উপদলকে আল্লাহ তাবারক তায়ালা এই দিনে মুক্তি ও বিজয় দান করেছেন।
সর্বশেষ কারবালা প্রান্তরে হযরত হোসাইন রা. ও আহলে বাইতের ৭২ জন শাহাদত বরণ করলেও সত্যের বিজয় হয়েছে পরাজিত হয়েছে ইয়াজিদ বাহিনী। এবং কিয়ামত পর্যন্ত মুসলিম নামধারী শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সূতিকাগার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। মুহাম্মদ আলী জাওহার যথার্থই বলেছেন,কতলে হুসাইন আসল মে মরগে ইয়াজিদ হ্যায়, ইসলাম জিন্দা হুতা হ্যায় হার কারবালা কে বাদ।
কাফির তথা অমুসলিমদের সঙ্গে লড়াইয়ের যৌক্তিক ও দালিলিক অবস্থান দৃশ্যমান থাকে, কিন্তু মুসলিম শাসকদের ইসলামবিরোধী কার্যকলাপের বিরোধিতা করতে গেলে কখনো নিজ অবস্থান অযৌক্তিক ও অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়। কেননা, তারা মুখে ইসলামের নানা কথা বলে জনগণকে সহজেই বিভ্রান্ত করে ফেলে। যদিও অনেক সময় কাফের বেইমানদের চেয়ে ইসলামের বেশি ক্ষতি হয়ে যায় নামধারী মুসলিম শাসকদের কারনে। তখন কারবালার ঘটনা দ্বীনের সকল মুজাহিদদের জন্য পাথেয় হিসেবে কাজ করবে।
আজ আমরা সমস্ত বাতিলের বিরুদ্ধে যথাসাধ্য লড়াই করে যাচ্ছি। কিন্তু যে বাতিল ফেরকা আমার চেতনার ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছি না। সময় এসেছে বিষয়টি নতুন করে পর্যালোচনা করার এবং আশুরার সঠিক তাৎপর্য ও মর্মার্থ সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার।
তোমার যৌবন গচ্ছিত আমানত সারা পৃথিবীর,
হে যুবক ! জগৎজুড়ে সৃষ্টি করে শান্তির নীড়।