আলোকিত ডেস্ক :
রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে জাতিসংঘ। শুক্রবার (২১ আগষ্ট) এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর মিয়ানমারে ও মিয়ানমারের বাইরে অবস্থানরত বাস্তুচ্যুত ও রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গা স¤প্রদায়ের জন্য বিশ্বের কাছে আবারও সহায়তা ও সমাধানের আহŸান জানিয়েছে।
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছিল। এর তিন বছর পরও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে এবং আরও নতুন নতুন অনেক চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারী রোহিঙ্গা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও স্থানীয় বাংলাদেশী জনগণের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন চাহিদাগুলো মেটানো এবং এই সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে আরও বেশি কাজ চালিয়ে যেতে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের প্রতি আহবান জানান জাতিসংঘ। আগামী ২৫ আগষ্ট ব্যাপক আকারে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা আগমনের তিন বছর পূর্ণ হবে।
রোহিঙ্গাদের হিসেবে তাঁদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ বর্তমানে মিয়ানমারের বাইরে রয়েছে। ২০১৭ সালের চরম মানবিক সংকটে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশ দেখিয়েছে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশ নিশ্চিত করেছে তাদের সুরক্ষা, ব্যবস্থা করেছে জীবন রক্ষাকারী মানবিক সাহায্যের। আজ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিবন্ধিত প্রতি দশ জন রোহিঙ্গার মধ্যে নয় জন বাস করে বাংলাদেশে। ইউএনএইচসিআর ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ নিবন্ধন অনুযায়ী কক্সবাজারে অবস্থান করছে প্রায় ৮ লক্ষ ৬০ হাজার রোহিঙ্গা।
বিবৃতিতে জাতিসংঘ জানিয়েছে, বাংলাদেশের এ মহানুভবতার প্রতিদানস্বরুপ রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের জন্য নিরন্তর সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
রোহিঙ্গা সংকটের পরিপূর্ণ সমাধান নিহিত আছে মিয়ানমারে। এডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেট-এর সকল সুপারিশ পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমেই এটি সম্ভব; আর মিয়ানমার সরকারও সেটি করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে প্রয়োজন সর্বস্তরের অংশগ্রহণ, মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে নতুন করে কার্যকরী আলোচনার সূত্রপাত, এবং এর পাশাপাশি দুই পক্ষের মধ্যে আস্থা তৈরির পদক্ষেপ। এসবের জন্য প্রয়োজন মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের চলাফেরার উপর বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার, আভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ গ্রামে ফেরার সুব্যবস্থা, এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়ে একটি পরিস্কার রোডম্যাপ।