আলোকিত ডেস্ক :
বাংলাদেশ রাইস রিসার্চ ইন্সটিটিউট এ পর্যন্ত সুগন্ধী চালের আটটি জাত আবিস্কার করেছেন। ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং উচ্চ মূল্যের কারনে সুগন্ধী চালের দিকে ঝুকছে কৃষকরা।
দেশে সুগন্ধী চালের যেসব জাত চাষ হয় তার ফলনের থেকে দ্বিগুণ ফলন হয় ব্রি এর উদ্ভাবিত নতুন জাতগুলিতে। ফলে কৃষকের লাভ বেশি আসে।
যেখানে দেশীয় জাতগুলিতে উৎপাদন হয় বিঘা প্রতি ১৮৭-২৯৯ কেজি সেখানে ব্রি উদ্ভাবিত জাতগুলিতে বিঘা প্রতি উৎপাদন হয় ৪৪৮-৮২১ কেজি পর্যন্ত। ক্ষেত্র বিশেষে ৩ থেকে ৪ গুন বেশি ফলন হয় এই জাতগুলিতে।
ব্রি উদ্ভাবিত ৮ টি সুগন্ধী চালের ধান গুলি হল-
১. বি আর ৫ ( দুলাভোগ)
২. ব্রি ধান ৩৪ (চিনিগুড়া চালের মত ও দ্বিগুন উৎপাদন)
৩. ব্রি ধান ৩৭
৪. ব্রি ধান ৩৮
৫. ব্রি ধান ৭০ (কাটারিভোগের মত)
৬. ব্রি ধান ৭৫
৭. ব্রি ধান ৮০ (জেসমিন)
৮. ব্রি ধান ৫০ (বাংলামতি / বাসমতি)
এগুলার ভেতর কৃষকরা সবথেকে বেশি চাষ করেন ব্রি ধান ৩৪। ১৯৯৭ সালে বাজারে অবমুক্ত করা হলেও ২০১০ এর পর থেকে এর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আরেকটি জাত হল ব্রি ধান ৭০ যেটা দেশীয় জাত কাটারিভোগের মত। বিঘা প্রতি এই জাতের উৎপাদন প্রায় ৬৩৪.৪ কেজির মত। কাটারিভোগের
উৎপাদনের তুলনায় এটা প্রায় দ্বিগুণ।
ব্রি ধান ৮০ থাইল্যান্ডের জনপ্রিয় ধানের জাত জেসমিনের মত এবং বিঘা প্রতি উৎপাদন হয় প্রায় ৬৭২ কেজি।
ব্রি ধান ৫০ এদেশে ক্রমেই পরিচিতি পাচ্ছে। এর নাম বাংলামতি। হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয় ৬-৬.৫ টন।
বাংলাদেশে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁ, পঞ্চগড়, রংপুর, নওগা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ এবং শেরপুরে সুগন্ধী চালের বাণিজ্যিক চাষ সবথেকে বেশি হচ্ছে।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে সুগন্ধী চালের উৎপাদন ছিল ২.৯ লক্ষ টন যার ভেতর ব্রি ধান ৩৪ উৎপাদিত হয়েভহে ১.০৫ লক্ষ টন।
রপ্তানি বাজার
সুগন্ধী চাল রপ্তানিতে প্রতিবেশি দেশ ভারত, পাকিস্তান বেশ এগিয়ে। দেশদুটি থেকে বাসমতি ও অন্যান্য সুগন্ধী চাল রপ্তানি হয়। মধ্যপ্রাচ্যের বড় বাজার তাদের দখলে। বাংলাদেশ থেকে অনুমতি ছাড়া চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ। কিন্তু যদি কৃষকদেরকে উচ্চ ফলনশীল এসব জাতের সাথে পরিচিত করানো যায় তবে কৃষি উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পাবে। রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। চাইলে মধ্যপ্রাচ্য সহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ বাজার ধরতে পারে। উত্তরাঞ্চলের দরিদ্রতা দূর করনে সম্ভাবনার দুয়ার খুলতে পারে আমাদের দেশের কৃষি বিজ্ঞানীদের এই উদ্ভাবন।